নন্দী ডেস্ক:
আওয়ামী-বাকশালীরা ক্ষমতায় থাকার জন্য জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে প্রায় ২ হাজার মানুষকে হত্যা করে দেশকে মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতের ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর মিরপুরে মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে মিরপুর পূর্ব থানা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত সুধী সমাবেশ ও আত্মকর্মসংস্থান সামগ্রী বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ কখনোই গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিল না। তারা অবৈধ ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করে গদিতে থাকার জন্য যা ইচ্ছা তাই করেছে। তাই তাদের বিদায়টাও মোটেই সম্মানজনক হয়নি। ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা যায় এমন লজ্জাজনক বিদায় অতীতে কারোরই হয়নি। আর যারা এভাবে একবার বিদায় নিয়েছে তারা আর কখনোই দৃশ্যপটে ফিরে আসতে পারেনি বরং তাদেরকে ইতিহাসের আস্তাকুঁড়েতে নিক্ষিপ্ত হতে হয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশের পতিত স্বৈরাচার আবারও ক্ষমতায় ফিরে আসার জন্য নানাবিধ ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নিচ্ছে। নানাভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি উপস্থিত সুধীদের উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে জানতে চান, যারা অকারণে মানুষ হত্যা করেছে তাদের এদেশে রাজনীতি করার অধিকার আছে কি না? এসময় তিনি অর্জিত বিজয়কে অর্থবহ করার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলনের দাবি ছিল খুবই যৌক্তিক। কিন্তু তারা বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে সমাধান করতে চায়নি বরং রাষ্ট্রীয় শক্তির অপব্যবহার করে আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করেছে। মূলত তারা অতি ছোট দাবিকে উপেক্ষা করতেই হাজার হাজার মানুষ খুন করে নির্মম পাশবিকতার পরিচয় দিয়েছে। তারা শুধু আবু সাঈদ বা মুগ্ধের মতো ছাত্রদের নয় বরং সকল শ্রেণি ও মানুষের ওপর নির্মমভাবে গুলি চালিয়েছে। তাদের জিঘাংসা থেকে রেহাই পায়নি নারী, শিশু ও বৃদ্ধরাও। মায়ের কোলে দুগ্ধজাত সন্তানও নিরাপদ ছিল না। এরপরও ফ্যাসীবাদীরা ক্ষমতায় ফেরার দিবাস্বপ্নে বিভোর। কিন্তু জনগণ তাদেরকে সে সুযোগ কখনো দেবে না বরং যেকোনো মূল্যে দেশে ফ্যাসিবাদী অপতৎপরতা ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দেবে।
জামায়াতের আমির বলেন, আওয়ামী দুঃশাসনে রাষ্ট্রের সকল সেক্টর ধ্বংস করা হয়েছে। তারা ব্যাংক-বীমাসহ অর্থনৈতিক সকল প্রতিষ্ঠান ও রাষ্ট্রের অঙ্গ প্রতিষ্ঠানগুলোকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে। মূলত, তারা জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তনের কথা বলে নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তন করে নিয়েছেন। জনগণ তাদের এমন অপশাসন ও দুঃশাসনে ফিরতে চায় না।
যারা অতীতে ক্ষমতায় ছিলেন তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে আমিরে জামায়াত বলেন, নিজেদের অতীতের দিকে তাকান। ভালো করলে জনগণ আপনাদেরকে আবারও বেছে নেবেন। অন্যথায় অবশ্যই প্রত্যাখ্যান করবেন। তিনি জনগণকে আস্থায় নিয়ে রাজনীতিকদের রাজনীতি করার আহ্বান জানান। তাহলে জনগণকে আপনাদের সাদরে গ্রহণ করবেন।
থানা আমির শাহ আলম তুহিনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি ওয়াহিদুল ইসলাম সাদীর পরিচালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির আব্দুর রহমান মূসা ও মহানগরীর সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম প্রমুখ।